সোমবার, ১৫ মে, ২০১৭

গান শোনার সেরা পদ্ধতি

গান চাঙা করে মানুষের মনকে। এখন গান শোনার যন্ত্র হিসেবে স্মার্টফোন আর হেডফোন মানুষের হাতের নাগালে। কিন্তু গান কীভাবে শোনা উচিত? গান শুনলে মন ভালো হয়, মস্তিষ্কে প্রশান্তি আসে। কিন্তু এই গান শোনার জন্য ভালো হেডফোন বা যন্ত্রের চেয়ে বেশি দরকার মানসিক প্রস্তুতি।
আধুনিক জীবনের কর্মব্যস্ততা আর মনোযোগ নষ্ট হওয়ার কারণে অনেকের গান শোনার অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। তাই গান শোনার আগে মানসিক প্রস্তুতি নিন। আধঘণ্টা আগে কানে হেডফোন লাগিয়ে রাখুন। এ ক্ষেত্রে নয়েজ ক্যানসেলিং হেডফোন হলে ভালো। আধঘণ্টা চুপচাপ থেকে বা শব্দ থেকে দূরে থেকে তারপর ধীরে ধীরে গান শুনলে মনে আসে প্রশান্তি।


গান শোনার সেরা পদ্ধতি হচ্ছে—আগে নিস্তব্ধতাকে উপভোগ করুন। কান আর মস্তিষ্ককে একটু বিশ্রাম দিয়ে স্তব্ধতাকে উপলব্ধি করতে দিন। এভাবে আধঘণ্টা পার করুন। এরপর দেখবেন মন্দ লাগছে না, গান শুনতে।
গান শুনে আপনি আনন্দিত হয়ে উঠতে পারেন। মেজাজ ফুরেফুরে লাগতে পারে। নাচতে ইচ্ছা হতে পারে কিংবা বাঁধ ভেঙে কান্নাও আসতে পারে। মন খারাপের সময় প্রিয় গান শুনলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই হয়তো আপনার ভালো লাগা শুরু হয়ে যেতে পারে। গান শোনার সঙ্গে মানসিক অবস্থা পরিবর্তনের প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকেরা।
অবশ্য শ্রবণশক্তি ঠিকঠাক রাখতে হলে দিনে এক ঘণ্টার বেশি যন্ত্রে গান বাজিয়ে না শোনারই পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। উচ্চ শব্দে, বেশি বেশি গান শুনে দুনিয়ার প্রায় ১১০ কোটি কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণী ইতিমধ্যেই কানের বারোটা বাজানোর ঝুঁকিতে আছে বলেও এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে জাতিসংঘ সংস্থাটি। নানা ধরনের অডিও প্লেয়ার, কনসার্ট এবং ক্লাব-বারগুলোকে অল্প বয়সী ব্যক্তিদের শ্রবণশক্তির জন্য ‘গুরুতর হুমকি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে। দুনিয়াজুড়ে ১২ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৪ কোটি ৩০ লাখ কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণী ইতিমধ্যেই শ্রবণশক্তির সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ধনী এবং মধ্য-আয়ের দেশগুলোর ১২ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের প্রায় অর্ধেকই নিজেদের ব্যবহার করা নানা অডিও ডিভাইসের কারণে শ্রবণশক্তির সমস্যায় আক্রান্ত হন। এ ছাড়া প্রায় ৪০ শতাংশই ক্লাবে-বারে উচ্চশব্দে বাজানো গান শোনা এবং লাইভ কনসার্টগুলোতে উপস্থিতির কারণে এ সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে। এ সমস্যা দিন দিন বাড়ছে বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি। উদাহরণ হিসেবে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে শ্রবণশক্তির সমস্যায় আক্রান্তের হার ১৯৯৪ সালে ৩ দশমিক ৫ থাকলেও ২০০৬ সালে তা বেড়ে ৫ দশমিক ৩ হয়ে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘরেবাইরে যেখানেই হোক, গান শোনার সময় শব্দের মাত্রা কমিয়ে রাখাটা জরুরি। আর অনেকে চার-পাঁচ থেকে দশ ঘণ্টাও এমপি-থ্রি প্লেয়ারে গান শোনে, কিন্তু শব্দের মাত্রা বেশি অবস্থায় দিনে এক ঘণ্টাও কানের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। তাই ব্যক্তিগত অডিও ডিভাইসের ব্যবহার দিনে এক ঘণ্টার চেয়ে কমিয়ে আনা এ সমস্যা প্রতিরোধে খুবই কার্যকর হতে পারে।
গান শোনা প্রসঙ্গে চিকিৎসকেরা বলেন, গান শুনলে রাগ কমে। মন শিথিল করা কোনো সংগীত শুনুন। প্রিয় শিল্পীর গান শুনলে মনের রাগ চলে যায়। মেজাজ ভালো হয়ে ওঠে। উচ্চাঙ্গসংগীত, রবীন্দ্রসংগীত, জ্যাজ বা যার যেমন পছন্দ, তেমন গান শুনতে পারেন। এতে শান্ত হয় মন।